বৃহস্পতিবার ২২শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

১০ মহররমে যে আমল করবেন

  |   রবিবার, ১৪ জুলাই ২০২৪   |   প্রিন্ট   |   67 বার পঠিত

১০ মহররমে যে আমল করবেন

মহাররম। এটি আরবি মাস গণনার প্রথম মাস। যার মাধ্যমে শুরু হয় নতুন হিজরি নববর্ষ। প্রতিবছরের মতো আমরা আবারও একটি নতুন হিজরি নববর্ষে উপনীত হয়েছি। ইতোমধ্যে বিদায় নিয়েছে ১৪৪৫ হিজরি। আগমন ঘটেছে ১৪৪৬ হিজরির। ইতিহাসে ইমাম হাসান ও হুসাইন রা. এর শাহাদাত বিজড়িত ঐতিহাসিক কারবালার ঘটনাটিও ঘটেছিল এই মহাররম মাসে।

প্রত্যেক মুমিন বান্দার জন্য হিজরি সন সম্পর্কে জানা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ফকিহদের মতে এ সম্পর্কে জ্ঞান রাখা ফরজে কেফায়া। কারণ, হিজরি সন গণনার সঙ্গে জড়িয়ে আছে যাবতীয় আমলের দিক নির্দেশনা। আর এ হিজরি সন গণনা করাও হয়, চাঁদের হিসাবে। চাঁদ দেখা না দেখার ভিত্তিতে। এজন্য এটিকে চন্দ্রমাসও বলা হয়।

কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন,

তারা আপনাকে নতুন চাঁদ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। বলুন, এটি মানবজাতির জন্য সময় নির্ধারণী ও হজ নির্দেশক মাধ্যম। (সুরা বাকারা : ১৮৯)

চাঁদ দেখার সঙ্গে রমজানের রোজা রাখা, রোজা ভেঙে ফেলা, ঈদ উদ্‌যাপন করা, ঈদুল আজহা নির্ধারণ করা ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত সম্পন্ন করা হয়। আর এ মহররম মাসে দুটি গুরুত্বপূর্ণ আমল রয়েছে। যাতে রয়েছে গুনাহ মাফের ঘোষণা এবং তওবা কবুলের প্রতিশ্রুতি।

ইতিহাসে ইমাম হাসান ও হুসাইন (রা.) এর শাহাদাত বিজড়িত ঐতিহাসিক কারবালার ঘটনাটিও ঘটেছিল এই মহররম মাসে। আর সেই দিনটি ছিল ১০ মহররম।

হাদিসে একাধিক বর্ণনায় এসেছে, স্বয়ং রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দিন রোজা রেখেছেন এবং সাহাবিদেরও রোজা রাখতে উৎসাহিত করেছেন। যা থেকে বুঝে আসে, এ দিনটি নফল রোজা রাখার মাধ্যমে উদ্‌যাপন করা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

বিখ্যাত সাহাবি হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত– তিনি বলেন, আল্লাহর রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় আগমন করে দেখতে পেলেন যে, (মদিনার) ইহুদিরা আশুরার (১০ই মহাররম) দিনে সাওম পালন তথা রোজা রাখছেন।

তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, কি ব্যাপার? (তোমরা এ দিনে সাওম পালন করছো কেন?) তারা বলল, এটি অতি উত্তম দিন, এ দিনে আল্লাহ তাআলা বনি ইসরাঈলকে তাদের শত্রুর কবল থেকে মুক্তি দান করেছেন, ফলে এ দিনে হজরত মুসা আ. সাওম পালন করেছেন। আল্লাহর রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি তোমাদের চেয়ে মুসা আ.কে অনুসরণ করার বিষয়ে অধিক দাবিদার। এরপর তিনি এ দিনে সাওম পালন করেন এবং সাওম পালনের নির্দেশ দেন। (সহিহ বুখারি : ২০০৪)

‎হজরত ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, অপর একটি বর্ণনায় তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আশুরার দিনের রোজার চেয়ে অন্য কোনো দিনের রোজাকে প্রাধান্য দিতে দেখিনি। (সহিহ বুখারি : ২০০৬)

সাহাবি হজরত আবু কাতাদা রা. থেকে বর্ণিত–
নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তাআলার নিকট আমি আশাপোষণ করি যে, তিনি আশুরার রোজার মাধ্যমে পূর্ববর্তী এক বছরের (গুনাহ) ক্ষমা করে দিবেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ : ১৭৩৮)

এ ছাড়া একজন সাহাবির প্রশ্নের উত্তরে তিরমিজির একটি বর্ণনায় এসেছে যে, রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যদি তুমি রমজানের পর রোজা রাখতে চাও, মহাররমে রোজা রাখ। কারণ এটি আল্লাহ তাআলার মাস। এতে এমন একটি দিন রয়েছে, যাতে আল্লাহ তাআলা একটি জাতির তওবা কবুল করেছেন। তিনি অন্য (অনাগত) জাতিকেও ক্ষমা করবেন।

সুতরাং ১০ মহররমের দিন রোজা রাখা এবং তওবা ইস্তেগফারের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আমল। এর মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা বিগত এক বছরের গুনাহ মাফ করবেন। তওবা কবুলের মাধ্যমে ক্ষমা করবেন।

মীযান মুহাম্মাদ হাসান, লেখক: খতিব, ভবানীপুর মাইজপাড়া হক্কানি জামে মসজিদ, গাজীপুর

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১:৫৫ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৪ জুলাই ২০২৪

প্রতিদিনের অর্থনীতি |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

July 2024
SSMTWTF
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031 

এক ক্লিকে বিভাগের খবর

সম্পাদক:
এম এ খালেক
Contact

মাকসুম ম্যানশন (৪র্থ তলা), ১২৭, মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০

০১৮৮৫৩৮৬৩৩০

E-mail: protidinerarthonity@gmail.com