
| মঙ্গলবার, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | প্রিন্ট | 572 বার পঠিত
বিশিষ্ট খ্যাতিমান ও অভিজ্ঞ ব্যবসায়ী জয়নুল আবেদীন জামাল। ব্যবসার ক্ষেত্রে নিজেকে বিস্তৃত পরিসরের লক্ষ্যে শিল্পের বিভিন্ন সেক্টরে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি দেশের শিল্পায়নে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে ক্রমাগত এগিয়ে চলেছেন বহুমুখী এই ব্যবসায়িক ব্যক্তিত্ব। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সাথে দেশের শিল্প ও আর্থিকখাতে নিজেকে পরিচিত করেছেন একজন পেশাদার ব্যবসায়ী হিসেবে।
জয়নুল আবেদীন জামাল দেশের শিল্পখাতে প্রতিষ্ঠা করেছেন চিটাগাং বিল্ডার্স অ্যান্ড মেশিনারি লিমিটেডের মতো কোম্পানি (সিবিএম গ্রুপ) যার চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন তিনি। এছাড়া সাইফেং সিকিউরিটিজ লিমিটেড এবং মার্চেন্ট সিকিউরিটিজ লিমিটেডেরও চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
চৌকস এই ব্যবসায়ী সময়ের সাথে সাথে নিজেকে জড়িয়েছেন বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের সাথে। জয়নুল আবেদীন দেশের স্বাস্থ্যখাতে সহযোগিতার মানসিকতা নিয়ে ব্যবসায়িক অশিংদার ও পরিচালক হিসেবে রয়েছেন সেন্ট্রাল হাসপাতাল লিমিটেড, এছাড়াও পরিচালক হিসেবে রয়েছেন ইডেন মাল্টি-কেয়ার হাসপাতাল লিমিটেড এবং ইউনিভার্সাল হেলথ সার্ভিসেস অ্যান্ড রিসার্চ লিমিটেডের সাথে। যেসব প্রতিষ্ঠান শত শত মানুষের কর্মসংস্থান তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।
উন্নত বিশ্বের সাথে সম্পৃক্ত আধুনিক পদ্ধতি, প্রযুক্তি, উৎপাদন, বিপণন এবং ব্যবস্থাপনা কৌশল সম্পর্কে তার রয়েছে ব্যাপক অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান। যা অর্জনের লক্ষ্যে ভ্রমণ করেছেন বিশ্বের বিভিন দেশ। ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি জয়নুল আবেদীন বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনে জড়িত রয়েছেন।
বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) ২০২৫-২০২৬ সালের নির্বাহী কমিটির নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন ফেডারেল ইন্স্যুরেন্সের নির্বাহী ও বিনিয়োগ কমিটির চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন জামাল। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে কথা হয় তার সাথে। আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে দেশের বীমা খাতকে এগিয়ে নিতে বিআইএ’র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
জয়নুল আবেদীন বলেন, বিআইএ’র এবারের নির্বাচনে অনেক চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, পরিচালক ও মুখ্য নির্বাহীদের মধ্যে যে একটা আগ্রহ তৈরি হয়েছে সেটা এখাতের জন্য ভালো। এ খাতের উন্নয়নে সরকারি বিভিন্ন দফতরে দাবি আদায়ের পাশাপাশি কথা বলার মতো লোক দরকার। এক্ষেত্রে দাবি আদায়ের মানসিকতা সম্পন্ন ব্যক্তি বিআইএ’র নেতৃত্বে আসলে বীমা খাতের মঙ্গল। বিআইএ’র দক্ষ নেতৃত্বের মাধ্যমে বীমা খাতে যেসব অনিয়ম, অরাজগতা রয়েছে সেগুলো রোধ করা সম্ভব।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ইন্সুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) নির্বাচনে যোগ্য ও দক্ষ ব্যক্তিরা সামনে এগিয়ে আসতে হবে। যোগ্য ব্যক্তিরা দায়িত্বে আসলে তাদের কার্যক্রমে বীমা খাতের উন্নয়ন ও নেতিবাচক প্রভাব থেকে বের হয়ে আসতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তাদের নেতৃত্বেই বীমা খাত আরো সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।
জয়নুল আবেদীন বলেন, দেশের বীমা খাতে নানামুখী সমস্যা রয়েছে। ব্যবসায়িক নানা প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। এগুলো থেকে উত্তরণের জন্য সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। আমরা যারা এখাতের নেতৃত্বে দিচ্ছি তাদেরই এগিয়ে আসতে হবে। বাইরে থেকে কেউ এসে এসব সমস্যা ঠিক করে দিয়ে যাবে না। তিনি বলেন, উন্নত বিশ্বে বীমাসহ সকল আর্থিক খাতে প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার হয়ে থাকে। যার মাধ্যমে অনেক অনিয়ম রোধ করা সম্ভব। বিশেষত: এ খাতে দক্ষ ও অভিজ্ঞ জনশক্তির অভাব রয়েছে। পুরো বীমা খাতে হাতে গোনা কয়েক জন অ্যাকচুয়ারি রয়েছে যাদেরকে সময়মতো পাওয়া যায় না। এখাতে আরো দক্ষ ও অভিজ্ঞ বীমাকর্মীর পাশাপাশি অ্যাকচুয়ারি প্রয়োজন। এ সমস্যা থেকে উত্তরণে বীমা কোম্পানিগুলোর আরো বেশি মনোযোগী হতে হবে। এক্ষেত্রে বিআইএ’র ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, বিগত কয়েক বছর হলো নন লাইফ বীমা খাতে মোটর ইন্সুরেন্সের যে বাধ্যবাদকতা ছিলো তা উঠিয়ে দেয়া হয়েছে। ফলে নন লাইফ বীমা কোম্পানিগুলো পরিবহন খাত থেকে আগে যে প্রিমিয়াম আয় করতো তা বন্ধ রয়েছে পাশাপাশি এই প্রিমিয়াম আয়ে সরকার যে রাজস্ব পেতো তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এসব সমস্যা সম্পর্কে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে কথা বলতে হবে। উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও ইন্সুরেন্সের বাধ্যবাধকতা বাড়াতে হবে। এক্ষেত্রে সরকারি নির্দেশনা অতি গুরুত্বপূর্ণ। বিআইএ এই ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তাই আমি মনে করি, দক্ষ ও যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তি বিআইএ’র নেতৃত্বে আসলে বীমা খাত নানামুখী সমস্যা থেকে উত্তরণের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে বীমা খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের বীমা খাত এখনো বিভিন্ন সংকটের মুখোমুখি, যার মধ্যে অন্যতম হলো গ্রাহকদের ন্যায্য দাবি দ্রুত সময়ে নিষ্পত্তির অভাব, নীতিগত দুর্বলতা এবং খাতটির প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থার সংকট। এই অবস্থায় শক্তিশালী ও দাবিদার নেতৃত্ব ছাড়া বীমা খাতের কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি সম্ভব নয়। স্টেকহোল্ডাররা অনেকেই মনে করেন, যদি দাবি আদায়ের মানসিকতা সম্পন্ন ব্যক্তি অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃত্বে আসেন, তবে এই খাত নতুন গতি ও দিক-নির্দেশনা পাবে। এমন নেতা বীমা কোম্পানি ও গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষায় কার্যকর নীতিমালা বাস্তবায়নে সক্ষম হবেন।
জয়নুল আবেদীন বলেন, বর্তমানে বীমা খাতে দাবি নিষ্পত্তিতে জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রিতা অন্যতম প্রধান সমস্যা। বিআইএ’র কঠোর নেতৃত্ব থাকলে গ্রাহকরা সহজেই তাদের ন্যায্য দাবি পাওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন রকমের হয়রানি থেকে মুক্তি পাবেন। বীমা কোম্পানিগুলোর স্বার্থ রক্ষায় সরকার ও নীতি-নির্ধারকদের সঙ্গে কার্যকর আলোচনা ও চাপে রাখার ক্ষমতা বিআইএ’র নেতৃত্বের থাকতে হবে। সঠিক নেতৃত্বের অভাবে বহু কোম্পানি আর্থিক চাপে পড়ে এবং অনেক গ্রাহক তাদের বীমার টাকা ঠিকমতো ফেরত পান না। শক্তিশালী ও দক্ষ নেতৃত্ব এসব সমস্যার সমাধান করতে পারে।
তিনি বলেন, বীমা খাতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারও সময়ের দাবি। দাবিদার নেতা থাকলে তিনি ডিজিটালাইজেশন, ব্লকচেইন প্রযুক্তির প্রয়োগ, দ্রুত অনলাইন বীমা দাবি নিষ্পত্তি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে কাজ করবেন। এছাড়া, নীতিমালা সংস্কার, কর কাঠামো সহজীকরণ ও গ্রাহকসেবার মানোন্নয়নের জন্য সরকারের কাছে জোরালো দাবিও তুলতে পারবেন। এই ধরনের নেতৃত্ব জনগণের মধ্যে বীমার প্রতি আস্থা ফিরিয়ে আনবে, যা খাতটির সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সর্বোপরি, বিআইএ-এর নেতৃত্বে যদি দাবি আদায়ের মানসিকতা সম্পন্ন, দূরদর্শী ও সাহসী ব্যক্তি আসেন, তাহলে বীমা খাতের কাঠামোগত উন্নয়ন হবে, গ্রাহকদের স্বার্থ সংরক্ষিত হবে এবং কোম্পানিগুলো তাদের ব্যবসা পরিচালনায় আরও স্বাধীনতা ও স্থিতিশীলতা পাবে। তাই আমি মনে করি, বীমা খাতের সুষ্ঠু বিকাশের জন্য এমন নেতৃত্ব নিশ্চিত করা সময়ের দাবি।
Posted ১:৩১ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
প্রতিদিনের অর্থনীতি | Protidiner Arthonity