
| শনিবার, ১৩ জুলাই ২০২৪ | প্রিন্ট | 119 বার পঠিত
বাংলাদেশে ব্যাংকিং খাতে দুরবস্থার কারণ শীর্ষক ইআরএফ‘র আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আজ শনিবার (১৩ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থনীতিবিদ ও পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর। ইআরএফ সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম। অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থান করেন ইআরএফের জ্যেষ্ঠ সদস্য ওবাইদুল্লাহ রনি ও সানাউল্লাহ সাকিব।
অনুষ্ঠানে ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, আর্থিক দুরবস্থার কারণে দেশ দিন দিন ঋণ-নির্ভর হয়ে পড়ছে। ধীরে ধীরে ঋণ পাওয়ার সক্ষমতাও কমছে। সরকার বাজেট বাস্তবায়নের জন্য পর্যাপ্ত রাজস্ব আদায় করতে পারছে না। এখন বাজেট বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় টাকাও নেই, ডলারও নেই। কীভাবে বাস্তবায়ন হবে? আর্থিক খাতের সংকট মোকাবিলায় রাজনৈতিক সদিচ্ছার কোনো বিকল্প নেই।
তিনি আরো বলেন, আমাদের বিদ্যুতের ক্ষেত্রে দুই বিলিয়ন ডলার বকেয়া পড়েছে। পর্যাপ্ত ডলার না থাকার কারণে জ্বালানি খাতসহ বিভিন্ন খাতের বিল পরিশোধ করতে পারছে না সরকার। যদি স্বাস্থ্য ভালো না থাকে তাহলে তার ভার বহনও করা যায় না। ব্যাংক খাতের দুর্বলতার কারণে এখন ব্যাংক ব্যক্তি খাতকেও ঋণ দিতে পারছে না আবার সরকারকেও ঋণ দিতে পারছে না। এখন ব্যাংক আমানতের প্রবৃদ্ধি সাড়ে ৮ থেকে ৯ শতাংশ। চলতি বছর যদি বাড়ে, তাহলে সেটা সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ হতে পারে। সে হিসাবে এবছর আমানত আসবে ১ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। তাহলে নতুন অর্থবছরের বাজেটে ব্যাংকখাত থেকে ঋণের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা কীভাবে দেবে ব্যাংক? সরকার এক লাখ ৩৭ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিলে ব্যক্তি খাত টাকা পাবে না। আবার বাজেটে বেসরকারি খাতের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ২৭ শতাংশ। এখন পর্যন্ত ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ ২২ থেকে ২৩ শতাংশের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। ব্যাংক খাতের আমানতের প্রবৃদ্ধি যদি না বাড়ে, সরকারকে যদি ঋণ দিতে হয় তাহলে ২৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি কীভাবে অর্জন হবে?
তিনি আরো বলেন, নির্বাচনের আগে সরকার বলেছিল আর্থিক খাতে ব্যাপক সংস্কার আনা হবে। ছয় মাস পার হয়ে গেলেও সংস্কারের কিছুই হয়নি। এটা হতাশাজনক। দেশের স্বার্থেই ব্যাংক খাতের সংস্কার জরুরি। আইএমএফ বাংলাদেশকে ঋণ দিয়েছে, এটাকে ভালো চোখেই দেখি। কিন্তু আমাদের নিজেদের স্বার্থেই ব্যাংক খাত সংস্কার করা দরকার। আমরা ব্যাংকের আমানত খেয়ে ফেলছি। এভাবে ব্যাংক কতদিন চলবে? ব্যাংক খাত ক্লিন সইপিং এর পাশাপাশি শ্বেতপত্র প্রকাশ করা দরকার। তিনি বলেন, আমাদের ব্যাংক খাতের সমস্যাগুলো সমাধান না করে জিইয়ে রাখছে। অর্থাৎ ঘরের দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা ঝাড়ু দিয়ে পরিস্কার না করে কার্পেটের নিচে রেখে দিচ্ছে। এতে করে কি আসলে দুর্গন্ধ দূর হবে? না, এটা আবার দুর্গন্ধ ছড়াবে। ব্যাংককে মন্দ ঋণ, অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থ পাচার লুকিয়ে এ খাতের সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়। এজন্য আর্থিক খাতের ক্লিনিংয়ের উদ্যোগ নিতে হবে। এ উদ্যোগ সরকারকে নিতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংককে দিয়ে নয়। ব্যাংক খাতে আজকের এই অবস্থার কারণ আমাদের খুঁজে বের করতে হবে।
Posted ৪:০০ অপরাহ্ণ | শনিবার, ১৩ জুলাই ২০২৪
প্রতিদিনের অর্থনীতি | Protidiner Arthonity