শুক্রবার ২৩শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এস আলম গ্রুপের সম্পদ না কেনার আহবান গভর্নরের

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বুধবার, ২৮ আগস্ট ২০২৪   |   প্রিন্ট   |   50 বার পঠিত

এস আলম গ্রুপের সম্পদ না কেনার আহবান গভর্নরের

রাষ্ট্রীয় স্বার্থে এ মুহূর্তে এস আলম গ্রুপের জমি ও সম্পদ না কেনার আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। আজ বুধবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে বাংলাদেশ ব্যাংকে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, এস আলম গ্রুপ ও তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সব ব্যাংকের লেনদেন ঋণ স্থগিত করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ‘বাজেয়াপ্ত হওয়ার ভয়ে গোপনে সম্পদ বিক্রি করে দিচ্ছে এস আলম গ্রুপ। আইনি জটিলতার কারণে এখনি হস্তক্ষেপ করতে পারছে না বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে শিগগিরই আইনি উপায় খুঁজে বের করা হবে। তাই সর্বসাধারণকে সাবধান করা হচ্ছে এস আলম গ্রুপের সম্পদ কেউ কিনবেন না। সাংবাদিকদের মাধ্যমে আমি হুঁশিয়ার করে দিচ্ছি। এসব সম্পদ জনগণের। এখানে কেউ হাত দেবেন না।

ইসলামী ব্যাংকে ঘটে যাওয়া কেলেঙ্কারি এবং পরিচালনা পর্ষদ নিয়ে গভর্নর বলেন, এইরকম ভাবে, এত বিস্তৃতভাবে, সুপরিকল্পিত এবং রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ব্যাংক কেলেঙ্কারির ঘটনা আমি আগে কখনো দেখিনি। বিশ্বে আমি এরচেয়ে বড় ব্যাংক কেলেঙ্কারি আর দেখিনি। সম্ভবত এটাই সবচেয়ে বড় ব্যাংক কেলেঙ্কারি। আমাদের জন্য এটা একটি শিক্ষণীয় মডেল। তবে এটা এড়িয়ে চলতে হবে। ইসলামী ব্যাংকের যে নতুন বোর্ড গঠন করা হয়েছে তাদের সঙ্গে বসবো। তাদেরকে আমি এক সপ্তাহ সময় দিয়েছি। তারা আমাদের একটি কর্মপরিকল্পনা দিবে। এখন আর বসে থাকার সময় নেই। কাজ করতে হবে এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গেই কাজ করতে হবে।

আমানতকারীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, আপনারা ধৈর্য ধরুন। যার যতটুকু অর্থের প্রয়োজন, ততটুকুই তুলুন। সবাই একসঙ্গে গেলে কেউ আমানত ফেরত পাবেন না। ব্যাংক খাত যেন ঘুরে দাঁড়ানোর সময় পায়। পৃথিবীর কোনো ব্যাংকই একসঙ্গে গ্রাহকদের আমানতের টাকা ফেরত দিতে পারবে না। গভর্নর বলেন, এখন ধৈর্যের সময়। আমরা দুর্বল ব্যাংকগুলো পুনর্গঠন করবো। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত গ্রাহকরা ব্যাংকে রাখা টাকা ফেরত পাননি, এমন ঘটনা ঘটেনি।

গভর্নর বলেন, ছয়টি ব্যাংকের পর্ষদ ভাঙা হয়েছে। আরো কয়েকটি ভাঙা হবে। শিগগিরই এ প্রক্রিয়া শেষ হবে। এটি ব্যাংগুলোকে বাঁচিয়ে রাখার প্রাথমিক প্রক্রিয়া। কারণ, পুরনো পর্ষদ দিয়ে ব্যাংকগুলোকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব হতো না। এখন এ ব্যাংকগুলোর পুনর্গঠন হবে মূল কাজ। এজন্য দেশী-বিদেশী বিভিন্ন পক্ষকে আহ্বান করা হবে। তিনি আরো বলেন, শুধু এস আলম গ্রুপ নয়, অন্য যারা মাফিয়া আছে তাদের ব্যাংকের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মূল্যস্ফীতির বিষয়ে জানতে চাইলে গভর্নর বলেন যেহেতু দেশে একটি বড় বন্যা হয়ে গেছে। তাই আগামী দুই তিন মাস মূল্যস্ফিতি নাও কমতে পারে। তবে আমি আশাবাদী আগামী ৬ থেকে ৮ মাসের মধ্যে ইনফ্লেশন কমে যাবে। কারণ মূল্যস্ফীতি কমাতে দুই দিক থেকেই কাজ করতে হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক এবং সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা। আমরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নিয়েছি। সাপ্লাই সাইট ঠিক হলে মূল্যস্ফিতি এমনিতেই কমে আসবে।

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আর এক ডলার বিক্রি করা হবে না। তবে সরকারি পেমেন্ট পরিশোধ করার জন্য মার্কেট থেকে ডলার সংগ্রহ করে আমরা সোনালী সহ অন্যান্য ব্যাংকগুলোকে দিচ্ছি। যেসব এলসি আগে খোলা হয়েছে সেসব দায় পরিশোধ, বিদ্যুতের দেনা পরিশোধ এবং সার আমদানির বিষয় গুরুত্ব দিয়ে মার্কেট থেকেই আমরা ডলার ব্যবস্থাপনা করছি। কিন্তু রিজার্ভ থেকে এক ডলার বিক্রি করারও কোনো পরিকল্পনা নেই।

তিনি বলেন, আমরা ইতিমধ্যেই সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করি ব্যাংকগুলো ঘুরে দাঁড়াবে তবে একটু সময় লাগবে। এতদিন পর্যন্ত আপনারা একটু অপেক্ষা করুন।

পূর্বের মতো ব্যাংকগুলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সহায়তা দেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকার টাকা চেপে আর কোনো ব্যাংকে অবৈধ সুবিধা দেবে না। আমানতকারীদের আস্থা ব্যাংকগুলোকেই ফেরাতে হবে। এখন টাকা চেপে আমানতকারীদের সহযোগিতা দিলে পুরো বাংলাদেশে এটার জন্য ইফেক্টেড হবে। তাই এখন আমানতকারীদের ধৈর্য ধরা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৪:১০ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২৮ আগস্ট ২০২৪

প্রতিদিনের অর্থনীতি |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

August 2024
SSMTWTF
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31 

এক ক্লিকে বিভাগের খবর

সম্পাদক:
এম এ খালেক
Contact

মাকসুম ম্যানশন (৪র্থ তলা), ১২৭, মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০

০১৮৮৫৩৮৬৩৩০

E-mail: protidinerarthonity@gmail.com