শুক্রবার ২৩শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দেশের ফার্মাসিউটিক্যালস খাতের সম্ভাবনাময় প্রতিষ্ঠানের নাম টেকনো ড্রাগস লিমিটেড

  |   রবিবার, ০৯ জুন ২০২৪   |   প্রিন্ট   |   89 বার পঠিত

দেশের ফার্মাসিউটিক্যালস খাতের সম্ভাবনাময় প্রতিষ্ঠানের নাম টেকনো ড্রাগস লিমিটেড

দেশের ফার্মাসিউটিক্যালস এবং কেমিক্যালস খাতের সম্ভাবনাময় প্রতিষ্ঠানের নাম টেকনো ড্রাগস লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি ওষুধ রপ্তানিতে দেশের শীর্ষ পাঁচ কোম্পানির মধ্যে একটি যেটি ওষুধ রপ্তানির মাধ্যমে ইতিমধ্যে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছে। জীবনরক্ষাকারী ঔষধ উৎপাদন ও বিক্রয়ের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশে ক্যানসারের ওষুধ উৎপাদনে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। এছাড়া, টেকনো ড্রাগস সাধারণত বিশেষায়িত পণ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটি ক্যন্সার রোগের ক্যামোথেরাপি, অ্যানেস্থেসিয়া বা চেতনানাশক ওষুধ, জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল, ইনজেকশন এবং সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ইমপ্ল্যান্ট স্টিক রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
জানা যায়, ইমপ্ল্যান্ট স্টিক যা বাংলাদেশে একমাত্র টেকনো ড্রাগস উৎপাদন করে। এটি ৫ বছরের জন্য জন্ম নিয়ন্ত্রনের জন্য প্রযোজ্য। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান প্রধান ঔষধ সমূহগুলো হলো: জন্ম নিয়ন্ত্রন মেডিসিন (সুখী থার্ড জেনারেশন ওরাল পিল, প্রোভেরা ইনজেকশন, ইমপ্ল্যান্ট স্টিক, এন্টিক্যান্সার মেডিসিন-হেরিটিন, জোলোমাইড, ইপোসাইড, চেতনানাশক মেডিসিন-লিডোসিন প্লাস ইনজেকশন, ভেনকুরোন ১০টিভি ইনজেকশন), সাধারণ হিউম্যান মেডিসিন (মোটিলেক্স সাসপেনশন, ওমিসেক, রোমিলেক, সেফিক্সোন ইনজেকশন) এবং ভেটেনারি মেডিসিন (ভারমিক ইনজেকশন, ডেক্সাভেট ইনজেকশন, রুমেন প্লাস পাউডার, ভিটা জিংক)।

প্রতিবছর বাংলাদেশ সরকারের নিকট পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের টেন্ডারের বিপরীতে সর্বোচ্চ পরিমান জন্ম নিয়ন্ত্রণ ঔষধ সরবরাহ করছে প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়াও ভেটেনারি ও সাধারণ হিউম্যান মেডিসিনও রয়েছে। কোম্পানিটির ১৭টি ডিপো রয়েছে যার মাধ্যমে সারাদেশে ঔষধ সরবরাহ করা হয়। তাছাড়া প্রতিটি স্তরে “সার্বক্ষণিক মনিটরিং টিম” রয়েছে যারা কোম্পানির প্রতিটি কাজের সঠিক মনিটরিং নিশ্চিত করে থাকে। কোম্পানিটি ড্রাগ অ্যাডমিনিসট্রেসন ও জিএমপিসহ অন্যান্য রেগুলটরি গাইডলাইন মেনে মানসম্মত ওষুধ উৎপাদন ও বিতরণ করে থাকে। করপোরেট গভর্নেন্সের পূর্ণাঙ্গ প্রতিফলন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, আইপিও তহবিলের মাধ্যমে ব্যবসা সম্প্রসারণ, বিনিয়োগকারীদের নিয়মিত লভ্যাংশ প্রদান, সর্বপরি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নসহ ওষুধ রপ্তানির মাধ্যমে দেশের সুনাম অর্জন করাই কোম্পানিটির মূল উদ্দেশ্য।

বর্তমানে টেকনো ড্রাগস লিমিটেডের গাজীপুর ও নরসিংদীতে দুইটি ফ্যাক্টরি রয়েছে। যার আয়তন ১৩১৭.৫০ ডেসিম্যাল। ফ্যাক্টরি দুইটিতে পৃথক পৃথক প্রোডাক্টের ধরন অনুসারে পেনিসিলিন বিল্ডিং, হরমোন বিল্ডিং এবং জেনারেল প্রোডাকশন বিল্ডিং, সেফালোস্পোরিন বিল্ডিং, মেডিকেল ডিভাইস এন্ড বায়োটেক বিল্ডিং, এন্টি-টিউবার ক্লোসিস বিল্ডিং, এনিমেল হেলথ বিল্ডিং ও অনকোলজি প্রোডাকশন বিল্ডিং সহ মোট ৯ টি ভবন রয়েছে। কোম্পানিটি পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করে নতুন যন্ত্রপাতি ক্রয়, নরসিংদী ফ্যাক্টরির ব্যালেন্সিং মডার্নাইজেশন রেনোভেশন অ্যান্ড এক্সপেনশন (বিএমআরই), গাজীপুর ফ্যাক্টরির ভবন নির্মাণ এবং আংশিক ঋণ পরিশোধে ব্যয় করবে। এতে কোম্পানিটির উৎপাদন ও বিক্রয় বৃদ্ধি পাবে। সেই সঙ্গে বিনিয়োগকারী ও স্টেকহোল্ডাররা লাভবান হবেন।
উল্লেখ্য, টেকনো ড্রাগস লিমিটেড ২০০৯ সালে প্রাইভেট কোম্পানি হিসেবে আরজেএসসি’তে নিবন্ধিত হয়। তবে, ২০১০ সালের ১ জুলাই কোম্পানিটি বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করে। প্রতিষ্ঠানটি প্রথমে যাত্রা শুরু করে ভেটেনারি প্রোডাক্ট দিয়ে। দেশে ভেটেনারি প্রোডাক্টের প্রবর্তক টেকনো ড্রাগস। পরবর্তীতে মানব স্বাস্থ্যের ওষুধ নিয়ে কাজ শুরু করে। কোম্পানিটি ২০১৪ সালে ওষুধ রপ্তানিতে চতুর্থ স্থান অর্জন করে। এরপর ২০১৫ ও ২০১৬ সালে তৃতীয় স্থান অর্জন করে। কোম্পানিটি ২০০৯ সালে প্রাইভেট কোম্পানি হিসেবে নিবন্ধিত হয় এবং ২০১৯ সালে প্রাইভেট কোম্পানি থেকে পাবলিক কোম্পানিতে রুপান্তরিত হয়।

বর্তমানে কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ৯৪ কোটি ১৫ লাখ টাকা। যার মধ্যে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের ৬৩ শতাংশসহ পরিচালনা পর্ষদের কাছে ৮৮ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ জালাল উদ্দিন আহমেদ একজন ফামার্সিস্ট তার নেতৃত্বে সর্বশেষ হিসাববছরে কোম্পানিটি ১৯ কোটি ৫৫ লাখ টাকা নিট মুনাফা করেছে। এছাড়া, ২০২৩ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী অনুযায়ী, পুনর্মূল্যায়নসহ কোম্পানির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ২৭ টাকা ৭৪ পয়সা এবং পুনর্মূল্যায়ন ছাড়া ২২ টাকা ৫৭ পয়সা। এ সময় কোম্পানির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) ২ টাকা ৮ পয়সা। বিগত ৫ বছরের ভারিত গড় হারে শেয়ারপ্রতি মুনাফা ৩ টাকা ২৫ পয়সা। কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে ইম্পেরিয়াল ক্যাপিটাল লিমিটেড ও ইবিএল ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড। এছাড়া আন্ডাররাইটার হিসেবে যৌথভাবে কাজ করছে ইবিএল ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড এবং বিএমএসএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।

কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহজালাল উদ্দিন আহমেদের দীর্ঘ ৪০ বছরের অধিক কর্মঅভিজ্ঞতা সাথে একঝাঁক পেশাদার কর্মকর্তা, গবেষণা ও উন্নয়ন কাজের গভীরতা, দেশি বিদেশি মার্কেটে ব্যবসা বিস্তার এবং সর্বপরি ওষুধ তৈরিতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার ইত্যাদি টেকনো ড্রাগস লিমিটেডকে বাংলাদেশের প্রথম সারির লাভজনক ওষুধ কোম্পানিতে পরিণত হবে বলে প্রত্যাশা বিনিয়োগকারীদের।

আজ রোববার (৯ জুন) প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির লক্ষ্যে চাঁদা গ্রহণ শুরু করেছে। এর আগে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের ৯০২তম কমিশন সভায় টেকনো ড্রাগস লিমিটেডকে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে আইপিওর মাধ্যমে ১০০ কোটি টাকা সংগ্রহের অনুমোদন দেয়া হয়।

বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে টেকনো ড্রাগস লিমিটেডের শেয়ারের মূল্য নির্ধারিত হয়েছে ৩৪ টাকা। আইপিওর মাধ্যমে টেকনো ড্রাগস কাট অফ প্রাইসের ৩০ শতাংশ ডিসকাউন্টে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য শেয়ার ইস্যু করা হয়েছে ২৪ টাকায়। কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রির নিলাম (বিডিং) বিপুল সাড়া পেয়ে নিরধারিত সময়ে শেষ হয়েছে। কোম্পানির আইপিওতে প্রতিটি বিও হিসেবে ১০ হাজার টাকা থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত আবেদন করতে পারবে বিনিয়োগকারীরা।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১:৫০ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৯ জুন ২০২৪

প্রতিদিনের অর্থনীতি |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

June 2024
SSMTWTF
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930 

এক ক্লিকে বিভাগের খবর

সম্পাদক:
এম এ খালেক
Contact

মাকসুম ম্যানশন (৪র্থ তলা), ১২৭, মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০

০১৮৮৫৩৮৬৩৩০

E-mail: protidinerarthonity@gmail.com