বুধবার ৪ঠা জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অন্তর্বর্তী সরকারের ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট আসছে আগামীকাল

  |   রবিবার, ০১ জুন ২০২৫   |   প্রিন্ট   |   103 বার পঠিত

অন্তর্বর্তী সরকারের ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট আসছে আগামীকাল

অর্থনৈতিক সংকট ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যেই ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। কাল সোমবার (২ জুন) বিকেল ৪টায় বাংলাদেশ টেলিভিশনে সম্প্রচারিত হবে এই প্রস্তাবিত বাজেট, যা অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ উপস্থাপন করবেন। আগে রেকর্ডকৃত এই বাজেট বাংলাদেশ টেলিভিশনের ফিড নিয়ে প্রাইভেট টিভি চ্যানেল,বেতার এবং অনেক অনলাইনে এই বাজেট বক্তৃতা সম্প্রচার করবে।

এই বাজেট বিদায়ী অর্থবছরের তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম হলেও বাজেটের মূল লক্ষ্য অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফেরানো, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং সামাজিক সুরক্ষা জোরদার করা। এ ছাড়া সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় উপকারভোগীর সংখ্যা ও ভাতার পরিমাণ বাড়ানো হচ্ছে পাশাপাশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি, জ্বালানি সাশ্রয় ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরিতে নজর থাকবে বলেও জানা গেছে।

অর্থ মন্ত্রণালয় বলছে বাস্তবায়ন করার যোগ্য করতেই বাজেটের আকার কমাতে হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি দেখানো হচ্ছে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা যা জিডিপির ৩.৬২ শতাংশ। এই ঘাটতি মিটবে বিদেশি উৎস ও দেশের ব্যাংকিং খাত থেকে ঋণ নিয়ে এবং সঞ্চয়পত্র বিক্রির সুদ থেকে।

জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৫.৫ শতাংশ, যা বিদায়ি বছরের সংশোধিত বাজেটের ৫.২৫ শতাংশ থেকে সামান্য বেশি। তবে আন্তর্জাতিক অর্থ সংস্থা যেমন বিশ্ব ব্যাংক,আইএমএফ এবং এডিবি বলছে প্রবৃদ্ধি হবে ৫ শতাংশের নিচে। সরকার মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য ঠিক করেছে এই বাজেটে। তবে অর্থনীতিবিদরা বলছেন এই লক্ষ্য বাস্তবায়ন করা কঠিন।

স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সম্প্রসারণ করার কথা থাকছে। এ জন্য উপকারভোগী এবং তাদের প্রাপ্য অর্থের পরিমাণ বাড়ানো হচ্ছে। অর্থায়ন বেশি করা হবে কৃষি,স্বাস্থ্য,শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে।

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আকার ঠিক করা হয়েছে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা যা বিদায়ী অর্থ বছরে ছিল ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। সরকারের লক্ষ্য বড় প্রকল্প বাদ দিয়ে বাস্তবায়ন যোগ্য ছোট ও মাঝারি উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয়া।

প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লক্ষ ১৮ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে ছিল ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থ বছরে এখন পর্যন্ত রাজস্ব ঘাটতি প্রায় ৭২ হাজার কোটি টাকা। আইএমএফ এর পরামর্শে সরকার এরপরও উচ্চ রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। অনুৎপাদনশীল খাতে ব্যয় বাড়বে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষ করে প্রশাসন পরিচালনা, ঋণ পরিশোধ, খাদ্য ভর্তুকি এবং ব্যাংক খাতের সংস্কারে বড় ব্যয় ধরা হয়েছে।

প্রস্তাবিত বাজেটে সাধারণ করদাতাদের আয়করে বড় কোনো ছাড় দেওয়ার পরিকল্পনা নেই। অনেক প্রত্যাশা থাকলেও করমুক্ত আয়সীমা বাড়ছে না। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য কর বাড়তে পারে। পুঁজিবাজারে অনিবন্ধিত কোম্পানির ক্ষেত্রে বাড়বে করপোরেট করহার। আবার লাভ হোক, লোকসান হোক, নির্দিষ্ট হারে যে কর দিতে হয়, সেটা এবার বাড়তে পারে।

কালো টাকা ঠেকাতে জমি কেনায় করহার কমানোর প্রস্তাব করতে পারেন অর্থ উপদেষ্টা। জমি কেনাবেচার ওপর কর এলাকাভেদে ৬, ৪ ও ৩ শতাংশ নির্ধারণ করা হতে পারে,যা এখন ৮,৬ ও ৪ শতাংশ।

বাজেটে আবগারি শুল্ক বসানোর সীমা বাড়তে পারে। বর্তমানে এক লাখ পর্যন্ত ব্যাংক হিসাবের স্থিতিতে কোনো আবগারি শুল্ক দিতে হয় না। এটি বাড়িয়ে তিন লাখ টাকা করার কথা চিন্তা করা হচ্ছে। এ ছাড়া আবগারি শুল্ক আরোপের স্তরও পুনর্বিন্যাস করা হতে পারে।

বাজেটে মূল্য সংযোজন কর ও ভ্যাট বাড়ানোর কারণে দাম বাড়তে পারে রেফ্রিজারেটর, এসি, মুঠোফোন, রড ও অন্যান্য পণ্যের।

কর হ্রাসের ফলে দাম কমতে পারে বাস, মাইক্রোবাস, চিনি, বিদেশি মাখন, ড্রিংক, শিরীষ কাগজ, ক্রিকেট ব্যাট ইত্যাদি পন্যের।

 

প্রতিদিনের অর্থনীতি/এসএ

 

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ২:১৫ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০১ জুন ২০২৫

প্রতিদিনের অর্থনীতি |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

June 2025
SSMTWTF
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930 

এক ক্লিকে বিভাগের খবর

সম্পাদক:
এম এ খালেক
Contact

মাকসুম ম্যানশন (৪র্থ তলা), ১২৭, মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০

০১৮৮৫৩৮৬৩৩০

E-mail: protidinerarthonity@gmail.com