
| মঙ্গলবার, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | প্রিন্ট | 1665 বার পঠিত
দেশের বীমা খাতে গ্রাহকসেবা, দাবি নিষ্পত্তি, প্রযুক্তিনির্ভর কার্যক্রম ও সুশাসনের ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নিজেকে একটি নির্ভরযোগ্য বীমা কোম্পানি হিসেবে গড়ে তুলছে ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স পিএলসি।
কোম্পানির চেয়ারম্যান এনামুল হকের কৌশলগত দিকনির্দেশনা ও মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এ এম এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর দূরদর্শী নেতৃত্ব মাত্র কয়েক বছরেই কোম্পানিটি আমূল পরিবর্তন এনেছে। বৈশ্বিক অস্থিরতা ও নানামুখী অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মধ্যেও কোম্পানির ডিজিটাল রূপান্তর, মানবসম্পদ উন্নয়ন, গ্রাহককেন্দ্রিক সেবা এবং শেয়ারহোল্ডারদের যথাযথ লভ্যাংশ প্রদানের কারণে ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স দেশের একটি নির্ভরযোগ্য ও অগ্রগামী প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছে।
ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স-এর পরিচালনা পর্ষদে রয়েছেন ২০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব, যারা দেশের শিল্প, বাণিজ্য, ব্যাংকিং, রাজনীতি ও বীমা খাতে সুপ্রতিষ্ঠিত। পরিচালনা পর্ষদের পরামর্শে কোম্পানিটি পুনর্গঠনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। চেয়ারম্যান এনামুল হক তার গভীর প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতা দিয়ে শুধু দিকনির্দেশনা দেননি, বরং সিইও মহিউদ্দিন চৌধুরীর ওপর সম্পূর্ণ আস্থা ও ভরসা রেখেছেন। পর্ষদের এই সমর্থন মহিউদ্দিন চৌধুরীকে একটি দক্ষ দল গঠন এবং বীমা খাতের প্রচলিত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সাহসী পদক্ষেপ নিতে অনুপ্রাণিত করেছে। তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই ফেডারেল ইন্স্যুরেন্সের আজকের দৃঢ় অবস্থানের মূল ভিত্তি।
বেসরকারি নন-লাইফ বীমা খাতের প্রথম প্রজন্মের প্রতিষ্ঠান ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স পিএলসি ১৯৮৭ সালের ১১ নভেম্বর যাত্রা শুরু করে। দীর্ঘ চার দশক ধরে প্রতিষ্ঠানটি স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও গ্রাহকবান্ধব নীতিতে পরিচালিত হয়ে আসছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স দেশের বীমা খাতে স্থিতিশীলতা আনয়নে দৃঢ় ভূমিকা পালন করছে। বীমা সেবার পরিসর বৃদ্ধি এবং আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে প্রতিষ্ঠানটি এখাতে বিরাজমান নানা চ্যালেঞ্জ ও কাঠামোগত সীমাবদ্ধতার মধ্যেও দৃঢ়তা ও নিষ্ঠার সঙ্গে নিজস্ব অবস্থান সুদৃঢ় করেছে।
ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স বর্তমানে মেরিন, অগ্নি, মোটর, ব্যক্তিগত দুর্ঘটনা, বিমান চলাচল এবং বিবিধ বীমা সেবা দিয়ে গ্রাহক সন্তুষ্টি বৃদ্ধিতে কার্যকর ভূমিকা রাখছে। প্রতিষ্ঠানটি ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত এবং ধারাবাহিকভাবে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ প্রদান করে আসছে। ২০২০ সাল থেকে বিনিয়োগকারীদের ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ প্রদান করে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে অবস্থান করছে। কোম্পানিটির বর্তমান সিইও-এর নেতৃত্বে বিনিয়োগে টেকসই আয়, সুশাসন ও স্বচ্ছ ব্যবস্থাপনার কারণে বাজারে একটি শক্তিশালী অবস্থান তৈরি হয়েছে।
দক্ষ সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং বিভাগ ও ব্যবস্থাপনাগত নেতৃত্বের মাধ্যমে সারাদেশে ৩১টি অফিস থেকে ৪৯৫ জন কর্মীবাহিনী নিরবচ্ছিন্নভাবে বীমা সেবা প্রদান করছে। কর্মীদের মূল লক্ষ্য হলো গ্রাহকের প্রয়োজন অনুযায়ী দ্রুত, নির্ভরযোগ্য ও মানসম্পন্ন সেবা নিশ্চিত করা। মেধাবী ও পেশাদার জনবল নিয়োগের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি কর্মীদের প্রশিক্ষণ, উন্নয়ন ও পেশাগত উৎকর্ষতায় সর্বদা গুরুত্ব দেয়। মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এ এম এম মহিউদ্দিন চৌধুরী কর্মপরিবেশ উন্নয়ন, কর্মীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং নৈতিক ব্যবসায়িক চর্চা প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। তার নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠানটি বীমা খাতের প্রচলিত নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে। পাশাপাশি ধারাবাহিকভাবে দাবি পরিশোধের সাফল্য গ্রাহকের আস্থা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স ২০২৪ অর্থবছরে গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক সূচকে স্থিতিশীলতা ধরে রেখেছে। বৈচিত্র্যময় চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও কোম্পানিটি করপূর্ব মুনাফা, আন্ডাররাইটিং মুনাফা, শেয়ারহোল্ডার ইক্যুইটি ও মোট সম্পদের ভারসাম্য রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছে। কোম্পানিটির ২০২৩ সালে আন্ডাররাইটিং মুনাফা যেখানে ছিল ১৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকা ২০২৪ সালে তা বেড়ে ১৫ কোটি ২৪ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি করপূর্ব মুনাফা ২০২৩ সালে ১১ কোটি ৩৯ লাখ টাকা থেকে ২০২৪ সালে বেড়ে হয়েছে ১১ কোটি ৮১ লাখ টাকা।
শেয়ারহোল্ডার ইক্যুইটি ২০২৩ সালে ৯১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা থেকে ২০২৪ সালে বেড়ে ৯১ কোটি ৯১ লাখ টাকা হয়েছে। মোট সম্পদ ২০২৩ সালে ১৪৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা থেকে ২০২৪ সালে বেড়ে ১৫৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকায় উন্নীত হয়েছে। এই আর্থিক প্রবৃদ্ধি কোম্পানির স্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধিতে সহায়ক। ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স ধারাবাহিকভাবে গত পাঁচ বছর ধরে ১০ শতাংশ হারে নগদ লভ্যাংশ প্রদান করছে। এটি দেশের বীমা খাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ আস্থার ভিত্তি তৈরি করেছে।
কোম্পানির আর্থিক স্বচ্ছতা, দায়বদ্ধতা, ঝুঁকিনির্বাচন ব্যবস্থা এবং ঋণ পরিশোধ সক্ষমতার কারণে ইমাজিং ক্রেডিট রেটিং লিমিটেড ফেডারেল ইন্স্যুরেন্সকে এএ+ রেটিং এবং স্বল্প মেয়াদে এসটি-১ রেটিং দিয়েছে। এই রেটিং প্রতিষ্ঠানটির স্বচ্ছ আর্থিক কাঠামো, সময়মতো দাবি পরিশোধ, সুশাসন এবং বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনার দক্ষতার প্রমাণ।
ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স বিগত বছরে বড় কর্পোরেট গ্রাহকের বীমা দাবি দ্রুত ও স্বচ্ছভাবে পরিশোধ করেছে। যেমন, যমুনা অটোমোবাইল কোম্পানির দাবি পরিশোধ হয়েছে প্রায় ২৪ কোটি টাকা, অটবি লিমিটেডের প্রায় ১৮ কোটি টাকা। এছাড়া হরাইজন প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ, শামীম কম্পোজিট টেক্সটাইলস, ডার্ট কম্পোজিট টেক্সটাইল লিমিটেড, মার্শাল হোমস এবং ভিয়েনা টেক্সটাইল লিমিটেডসহ শীর্ষ শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর দাবি গড়ে ৪ থেকে ৫ কোটি টাকার মধ্যে পরিশোধ করা হয়েছে। দ্রুত দাবি নিষ্পত্তি প্রতিষ্ঠানটিকে দেশের নন-লাইফ বীমা খাতে একটি নির্ভরযোগ্য নাম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
কোম্পানির ধারাবাহিক সাফল্যের বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এ এম এম মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে বীমা খাতের প্রবৃদ্ধির বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা প্রযুক্তিনির্ভর সেবা, নতুন পণ্য প্রবর্তন এবং গ্রাহককেন্দ্রিক সেবাকে অগ্রাধিকার দিয়ে আসছি। পাশাপাশি মানবসম্পদ উন্নয়ন ও সুদৃঢ় নিয়ন্ত্রণ কাঠামোর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটিকে ভবিষ্যতের জন্য টেকসই ভিত্তিতে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা শুধু প্রফিটের কথা ভাবি না, গ্রাহকের আস্থা অর্জন ও টেকসই ভবিষ্যৎ নির্মাণও আমাদের লক্ষ্য।
তিনি আরও বলেন, আমরা ক্লেইম নিষ্পত্তিতে দ্রুততা এনেছি, পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ নিয়েছি এবং গ্রাহকসেবাকে আরও সহজ ও ডিজিটাল করেছি। ভবিষ্যতে আরো যুগোপযোগী প্রযুক্তিগত বীমা পণ্য সম্প্রসারণ, মানবসম্পদ উন্নয়ন, নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় এবং শেয়ারহোল্ডারদের জন্য দীর্ঘমেয়াদি মূল্যের নিশ্চয়তা নিশ্চিত করাই আমাদের অগ্রাধিকার হবে।
মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও অংশীদারিত্বের ভিত্তিতেই আমরা আগামী দিনে আরও শক্তিশালী, আধুনিক ও গ্রাহককেন্দ্রিক একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে পারব।
Posted ৩:৩২ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
প্রতিদিনের অর্থনীতি | Protidiner Arthonity