সোমবার ২৩শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের অর্থনৈতিক প্রভাব নিয়ে বাড়ছে বৈশ্বিক উদ্বেগ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক   |   শনিবার, ২১ জুন ২০২৫   |   প্রিন্ট   |   137 বার পঠিত

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের অর্থনৈতিক প্রভাব নিয়ে বাড়ছে বৈশ্বিক উদ্বেগ

মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার চলমান সংঘাত দ্বিতীয় সপ্তাহে পা রাখল। পরস্পরের বিরুদ্ধে চালানো হামলা ও পাল্টা হামলায় ইতোমধ্যেই দুই পক্ষেই প্রাণহানি ও অবকাঠামো ধ্বংসের খবর মিলছে। যদিও তাৎক্ষণিকভাবে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে বড় কোনো প্রভাব পড়েনি, তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন— পরিস্থিতি দীর্ঘস্থায়ী হলে তা বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অস্থিরতা তৈরি করতে পারে।

বিশ্বখ্যাত সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের ব্র্যান্ডেইস বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক নাদের হাবিবি জানান, এখন পর্যন্ত সংঘাতের প্রভাব তেলবাজার বা বিশ্ব পুঁজিবাজারে গুরুতর আকারে দেখা যায়নি। তবে যদি এই উত্তেজনা পারস্য উপসাগর ও হরমুজ প্রণালি পর্যন্ত বিস্তৃত হয়, তাহলে বিশ্বের প্রায় ২০ শতাংশ তেলের সরবরাহ ঝুঁকিতে পড়বে।

তিনি বলেন, “বর্তমানে ইরান ও ইসরায়েল পরস্পরের অর্থনৈতিক অবকাঠামোর ওপর সরাসরি হামলা চালানো থেকে বিরত থাকলেও, যুদ্ধ যদি পূর্ণমাত্রায় রূপ নেয় এবং তাতে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য শক্তিধর রাষ্ট্র জড়িত হয়, তাহলে তার গভীর প্রভাব পড়বে বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি, জ্বালানি বাজার, বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচল এবং আন্তর্জাতিক বিনিয়োগে।”

ইসরায়েল অভিযোগ করেছে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির খুব কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানের সামরিক, পারমাণবিক এবং আবাসিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়। এতে ইরানের কয়েকজন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা, পারমাণবিক বিজ্ঞানী এবং সাধারণ মানুষ নিহত হন বলে দাবি করেছে তেহরানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম তাসনিম নিউজ।

অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) জানিয়েছে, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির প্রমাণ তারা পায়নি। বিশেষজ্ঞদের অনেকেই এ হামলার তুলনা করছেন ২০০৩ সালের ইরাক যুদ্ধের সূচনার সঙ্গে, যেখানে ‘ভুয়া তথ্য’ দিয়ে যুদ্ধ শুরু হয়েছিল।

ইসরায়েলের আগ্রাসনের জবাবে, ইরানের বিপ্লবী রক্ষী বাহিনী (আইআরজিসি) ২১ জুন পর্যন্ত ‘ট্রু প্রমিজ থ্রি’ নামের সামরিক অভিযানে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের বিভিন্ন সামরিক ও বাণিজ্যিক স্থাপনায়। সংঘাত ক্রমশ জটিল আকার ধারণ করছে, যা অঞ্চলজুড়ে নিরাপত্তা ও সরবরাহ চেইনে দীর্ঘস্থায়ী বিপর্যয়ের আশঙ্কা সৃষ্টি করছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, হরমুজ প্রণালি দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ২ কোটি ব্যারেল অপরিশোধিত তেল পরিবাহিত হয়। এ পথ যদি অনিরাপদ হয়ে ওঠে, তবে তেলের দামে ব্যাপক ঊর্ধ্বগতি হবে, যা সরাসরি প্রভাব ফেলবে পরিবহন, খাদ্য ও ভোক্তা পণ্যের মূল্যস্ফীতিতে।

অধ্যাপক হাবিবির মতে, “বাজার এখনো স্থিতিশীল থাকলেও আতঙ্ক বাড়ছে। যুদ্ধের পরিধি বাড়লে এশিয়া, ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার মতো প্রধান অর্থনৈতিক অঞ্চলেও তার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।”

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১:২৮ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২১ জুন ২০২৫

প্রতিদিনের অর্থনীতি |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

June 2025
SSMTWTF
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930 

এক ক্লিকে বিভাগের খবর

সম্পাদক:
এম এ খালেক
Contact

মাকসুম ম্যানশন (৪র্থ তলা), ১২৭, মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০

০১৮৮৫৩৮৬৩৩০

E-mail: protidinerarthonity@gmail.com