
| রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | প্রিন্ট | 442 বার পঠিত
প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের ওপর বিদেশি ঋণ গ্রহণে সীমারেখা টেনে দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সংস্থাটি জানায়, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ৮৪৪ কোটি ডলার পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবে বাংলাদেশ। এর আগে এ ধরনের কোনো সীমা নির্ধারণ করা হয়নি।
গত জুনে ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির ১৩৪ কোটি ডলার ছাড়ের পর আইএমএফ ‘বাংলাদেশ কান্ট্রি রিপোর্ট’ প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদনে পরবর্তী কিস্তি পেতে যেসব শর্ত মানতে হবে, তার মধ্যে নতুন ঋণ সীমা অন্যতম।
শর্ত অনুযায়ী, ত্রৈমাসিকভিত্তিক ঋণের পরিমাণও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। প্রথম তিন মাসে সর্বোচ্চ ১৯১ কোটি, ছয় মাস শেষে ৩৩৪ কোটি, নয় মাসে ৪৩৪ কোটি এবং পুরো অর্থবছরে সর্বোচ্চ ৮৪৪ কোটি ডলার পর্যন্ত ঋণ নেওয়া যাবে। প্রতি তিন মাস অন্তর বিদেশি ঋণের পরিস্থিতি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করবে আইএমএফ।
আইএমএফ ২০২৩ সালে যখন ৪.৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ অনুমোদন করে, তখন এমন কোনো শর্ত ছিল না। তবে গত জুনে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি অনুমোদনের সময় মূল ঋণের পরিমাণ ৮০০ মিলিয়ন ডলার বৃদ্ধি পায় এবং মেয়াদ ছয় মাস বাড়ানো হয়। এ পর্যন্ত বাংলাদেশ আইএমএফের এই প্রোগ্রাম থেকে ৩.৬ বিলিয়ন ডলার পেয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক শীর্ষ কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানান, আইএমএফের সর্বশেষ ঋণ স্থায়িত্ব বিশ্লেষণ (ডিএসএ) অনুযায়ী এ সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। ওই বিশ্লেষণে বাংলাদেশকে টানা দুই অর্থবছর ধরে ‘মধ্যম ঝুঁকি’র দেশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আগে ‘কম ঝুঁকি’তে থাকলেও রপ্তানি ও রাজস্ব আয়ের তুলনায় ঋণ পরিশোধের চাপ বেড়ে যাওয়ায় ঝুঁকির মাত্রা বাড়ানো হয়েছে।
ডিএসএ অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ঋণ-রপ্তানি অনুপাত দাঁড়ায় ১৬২.৭ শতাংশে, যা প্রাক্কলিত ১১৬-১১৮ শতাংশের তুলনায় অনেক বেশি। বিদেশি ঋণ-রাজস্ব অনুপাতও বেড়েছে। ফলে নতুন করে ঋণ নেওয়ার সক্ষমতা সীমিত হয়েছে।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে মেগা প্রকল্প ও করোনা-সম্পর্কিত ব্যয়ের কারণে বিদেশি ঋণ ব্যাপক হারে বেড়েছিল। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৩ বছরে বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ তিনগুণেরও বেশি বেড়েছে—যা দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে দ্রুত ঋণ বৃদ্ধির রেকর্ড।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯-১০ অর্থবছরে বৈদেশিক ঋণ ছিল ২০৩ কোটি ডলার। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে তা দাঁড়িয়েছে ৮০২ কোটি ডলারে। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকর্তাদের দাবি, অতীতের তুলনায় এখন ঋণ নেওয়ার প্রবণতা কিছুটা কমেছে।
Posted ১:২৯ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
প্রতিদিনের অর্থনীতি | Protidiner Arthonity